WHO মতে বর্তমানে বাংলাদেশে ২ লাখের বেশি নার্সের ঘাটতি রয়েছে!

বর্তমানে বাংলাদেশে ২ লাখের বেশি নার্সের ঘাটতি রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ( WHO ) হিসাব অনুযায়ী হাসপাতালের শয্যা, চিকিৎসক এবং নার্সের অনুপাত হতে হবে ১:৩ | দক্ষ নার্স হতে হবে! #bebrainerupdate

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ। আধুনিক নার্সিং পেশার রূপকার ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপন করা হবে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের নার্স, আমাদের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক শক্তি, নার্সিং-সেবার ভিত্তি’। দেশে ২ লাখের বেশি নার্সের ঘাটতি রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী হাসপাতালের শয্যা, চিকিৎসক এবং নার্সের অনুপাত হতে হবে ১:৩। 

অর্থাৎ এক জন চিকিৎসকের সঙ্গে অন্তত তিন জন নার্স থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে ১ লাখ ২ হাজার ৯৯৭ জন ডাক্তারের বিপরীতে নার্স রয়েছেন মাত্র ৭৬ হাজার ৫১৭ জন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডাক্তার অনুপাতে নার্স থাকার কথা ৩ লাখ ৮ হাজার ৯৯১ জন। চিকিৎসকের তুলনায় নার্সের ঘাটতি দুই লাখ ৩২ হাজার ৪৭৪ জন। এতে করে রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবার স্বাভাবিক গতি। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও যোগ্যতা অনুযায়ী নার্স পদমর্যাদা পায়নি। এমপিএইচসহ দেশ-বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রিধারী সহস্রাধিক নার্স আছেন। নিয়ম অনুযায়ী ধাপে ধাপে তাদের পদোন্নতি পাওয়ার কথা। কিন্তু পায়নি। এই বৈষম্যের কারণে নার্সদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আধুনিক নার্সিং পেশার রূপকার ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের দেওয়া সেই সাদা পোশাকও সরকারকে ভুল বুঝিয়ে নার্সদের পোশাক পরিবর্তন করায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এর পরিবর্তন চায়।

ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্ম ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে। তিনি ছিলেন অপূর্ব রূপসী, অন্যদিকে খুবই দয়ালু ও স্নেহপূর্ণ মনের অধিকারী। তাকে ইউরোপের অন্ধকারে আলোকবর্তিকা বলে আখ্যায়িত করা হয়। নাইটিঙ্গেলের বাবা ছিলেন দুটো স্টেটের মালিক এক ধনী ভূস্বামী। নাইটিঙ্গেল যখন কেবল যৌবনে পা দেন, তখন তার ধনী বাবা পুরো পরিবারকে নিয়ে ইউরোপ ভ্রমণে বের হন। এই ভ্রমণই তরুণী নাইটিঙ্গেলের চিন্তাধারায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে। নাইটিঙ্গেল মানবসেবা প্রথম অনুভব করেন ১৭ বছর বয়সে লন্ডনে থাকা অবস্থায়।   

পরবর্তীকালে এই অনুভবকে তিনি ‘ঈশ্বরের ডাক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তবে সেবাকে জীবনের ব্রত হিসেবে নেওয়ার কথায় প্রবল আপত্তি আসে তার পরিবার থেকে। তখন সমাজে নার্সিং ছিল নিম্নবিত্ত, অসহায়, বিধবা নারীদের পেশা। পরিবারের প্রবল আপত্তিকে পাশ কাটিয়ে তিনি নিজেকে নার্সিংয়ের কৌশল ও জ্ঞানে দক্ষ করে তোলেন। বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সুবাদে তিনি সেসব দেশের সেবাব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা ও অপেক্ষাকৃত উন্নত ব্যবস্থাতে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ১৮৫৩ সালে লন্ডনের মেয়েদের একটি হাসপাতালে নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব নেন। নাইটিঙ্গেলের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অসুস্থ সৈন্যদের পাশে দাঁড়ানো। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের এই যুদ্ধে সৈন্যদের অবস্থা বিপন্ন। সে সময় প্রতিরক্ষা দপ্তরের সেক্রেটারি সিডনি হার্বাট নাইটিঙ্গেলকে লিখলেন—‘যুদ্ধের এই বিশৃঙ্খল অবস্থায় আহত সৈন্যদের তত্ত্বাবধান করার মতো একজনও উপযুক্ত ব্যক্তি নেই। যদি আপনি এ কাজের ভার গ্রহণ করেন, দেশ আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।’

নার্সিং সেক্টরের উন্নয়নে বর্তমান সরকার অনেক কিছু করেছেন। ২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে আটটি নার্সিং ইন্সটিটিউটকে নার্সিং কলেজে রূপান্তর করেন। এন্ট্রি পয়েন্টে সিনিয়র স্টাফ নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে সারা দেশে হাসপাতালগুলোতে ৪০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে সেবার মান বাড়াতেই এই উদ্যোগ। তবে তারা যে পদে চাকরিতে প্রবেশ করছেন, চাকরি থেকে বিদায় নিচ্ছেন সেই পদে থেকেই। অর্থাত্, সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে চাকরিতে যোগদান করে বেশির ভাগই বিদায়ও নিতে হচ্ছে একই পদে থেকে। নার্সিং সেক্টরের মানোন্নয়নে সরকার প্রধান আন্তরিক হলেও তা বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রশাসনের অনীহা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে। কোনো কোনো কর্মকর্তা নার্সদের প্রতি বিরূপ মনোভাবও পোষণ করে বলেন, নার্স আবার কেন অফিসার হবে? কিন্তু যে কর্মকর্তা বলেছেন, তার চেয়ে অনেক নার্স আছেন, যারা উচ্চশিক্ষিত। নার্সদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের অভাব নেই। তবে জামায়াত-শিবির ও সরকারবিরোধীদের বর্তমান সরকারের আমলে দাপট বেশি। বেশির ভাগ নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপালও তারা। নার্সিং অধিদপ্তরও তাদের বলয়ে। আইপিজিএমআরকে (পিজি হাসপাতাল) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা করা হয়, তখন সরকারবিরোধী নার্স-কর্মচারীদের একটি সংগঠন এর তীব্র বিরোধিতা করে। ঐ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ছবিও ভাঙচুর করা হয়। সেই সংগঠনের নেত্রী বর্তমানে নার্সিংয়ের একটি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান। ঐ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষের সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ছিলেন খান মোহাম্মদ ইসহাক। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার তীব্র বিরোধিতা ও আন্দোলন করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছিলেন, সেই সংগঠনের নেত্রী একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রধান। এটা দেখে খুবই কষ্ট লাগে। এটা কীভাবে সম্ভব? হয়তো কষ্ট নিয়ে মরতে হবে।

সরকারি হাসপাতালের পরিচালকগণ ও বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলেন, চিকিৎসকরা রোগীকে শুধু ব্যবস্থাপত্র দিয়ে চলে যান। বাকি সিংহভাগ সময় নার্সের তত্ত্বাবধানেই রোগী থাকেন। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলেন। এই মহত পেশার নার্সদের পদোন্নতিসহ সুযোগ-সুবিধা প্রদানে অবহেলা করার সুযোগ নেই। বর্তমান সরকার নার্সদের যেভাবে প্রশিক্ষিত করে তুলেছে, তাদের যে পদমর্যাদা পাওয়ার কথা, তাও পাচ্ছেন না।দেশে ২০ হাজার সরকারি নার্স বেকার রয়েছেন।

📲 আমাদের সাথে যোগাযোগের নাম্বার ও লিংকঃ 

📲 FB Message URL:  http://m.me/107474017326176

📞 Telegram: https://t.me/bebrainerltd

🎥 Whatsapp: https://wa.me/+8801796636922

 📞 অফিস নাম্বারঃ 01796636922 / 01312296333 / 01988054815 / 01984808099 

📲 Website: https://www.bebrainer.app/

🎥 Android App: https://play.google.com/store/search?q=bebrainer&c=apps

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *