ছাত্র আন্দোলনে কাটা-ছেঁড়ার প্রাথমিক চিকিৎসা!

আন্দোলনের সময় কেটে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা যেভাবে করবেন! প্রথমিক চিকিৎসায় অনেকের জীবন বেঁচে যেতে পারে! [ Share to Save Life ] ♥

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ যাতে না হয় সেটি খেয়াল রাখতে হবে! ছাত্রদের জয় হোক! আমিন!

কাটা-ছেঁড়ার প্রাথমিক চিকিৎসায় নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—

✅ ১. রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করুন

যেকোনো কাটা-ছেঁড়ায় প্রথমেই ক্ষত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে।

প্রথমে হাত সাবান-পানি অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে ভালোমতো পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এতে হাত থেকে ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রামণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। সম্ভব হলে গ্লাভস পরে নিন।

ক্ষতস্থানের ওপরে কোনো কাপড় থাকলে সেটি সরিয়ে নিন। তবে কাপড় যদি ক্ষতস্থানের সাথে আটকে যায় অথবা ক্ষতের অনেক ভেতরে ঢুকে যায় তাহলে সেটি টানাটানি করে সরানোর চেষ্টা করবেন না।

এবার পরিষ্কার ও শুকনো এক খণ্ড মোটা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থানটি কয়েক মিনিট ভালোমতো চেপে ধরে রাখতে হবে। যতক্ষণ রক্তক্ষরণ বন্ধ না হয়, ততক্ষণ এভাবে চেপে ধরে রাখতে হবে। রক্তক্ষরণ বন্ধে এমন কাপড় বেছে নেওয়া উচিত যার শোষণক্ষমতা ভালো। যেমন: গজ ব্যান্ডেজ, মোটা রুমাল ও তোয়ালে। এক্ষেত্রে তুলা জাতীয় কিছু ব্যবহার করা উচিত নয়। তুলায় থাকা আঁশ ক্ষতস্থানে আটকে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, ক্ষততে কোনো বস্তু আটকে থাকলে তা বের না করে, ক্ষততে সরাসরি চাপ দেওয়া যাবে না। চোখের ক্ষতেও সরাসরি চাপ দিবেন না।

আক্রান্ত অংশ যতটা সম্ভব কম নড়াচড়া করতে হবে। সম্ভব হলে রোগীকে শুইয়ে দিতে হবে।

হাতের কোথাও কাটলে ক্ষতের অংশটি উঁচু করে তুলে ধরতে হবে (মাথা থেকে উঁচুতে)। পায়ের কোথাও কাটলে পা উঁচুতে তুলে ধরতে হবে (হৃৎপিণ্ড থেকে উঁচুতে)। এতে আক্রান্ত অংশে রক্তসঞ্চালন কমবে এবং রক্তপাত কমে আসবে।

✅ ২. ক্ষতস্থান পরিষ্কার করুন

ক্ষত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হলে কেটে যাওয়া অংশটুকু পরিষ্কার করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—

প্রথমে নিজের অথবা যে ড্রেসিং করবে তার হাত ভালোভাবে সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

কাটা-ছেঁড়ার অংশটি বিশুদ্ধ পানিতে ৫–১০ মিনিট ধরে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

সাবান-পানি দিয়ে ক্ষতের আশেপাশের অংশটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। তবে ক্ষতস্থানের ভেতরে যেন সাবান না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া কোনো অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।

ধারালো ও চোখা জিনিস ঢুকে গিয়ে কেটে গেলে ক্ষতস্থানের ভেতরে কিছু ঢুকে আছে কি না সেটি ভালোভাবে লক্ষ করতে হবে। যদি এমন কিছু পাওয়া যায় তাহলে তা বের না করে দ্রুত হাসপাতালে অথবা ডাক্তারের কাছে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।

কাটা-ছেঁড়ার ভেতরে কিছু দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু যেই জিনিস দিয়ে কেটে-ছিঁড়ে গেছে তার সবগুলো খুঁজে পাওয়া না গেলেও ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি।

কোনোভাবেই ক্ষতস্থানে কোনো ধরনের খোঁচাখুঁচি করবেন না।

✅ ৩. ক্ষতস্থানে ড্রেসিং

ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার পর ড্রেসিং করে ক্ষতস্থান মুড়ে দিলে তা ধুলাবালি ও রোগজীবাণু থেকে ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতো করে চেপে চেপে শুকিয়ে নিতে হবে।

এরপর ‘অ্যাডহেসিভ ব্যান্ডেজ’, অর্থাৎ ক্ষতস্থানকে পুরোপুরি ঢেকে দিয়ে তার চারিদিকে আপনা-আপনি লেগে থাকে—এমন ব্যান্ডেজ লাগাতে হবে। এগুলো ফার্মেসিতে সার্জিন প্যাড ও সার্জিন পোর-সহ বিভিন্ন নামে কিনতে পাওয়া যায়।

এই ধরনের ব্যান্ডেজ হাতের কাছে পাওয়া না গেলে জীবাণুমুক্ত (স্টেরাইল) গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষতটি ব্যান্ডেজ করে নিতে হবে।

উভয় ধরনের ব্যান্ডেজ এর আকারই ক্ষতের আকারের চেয়ে সামান্য বড় হতে হবে।

ব্যান্ডেজ এর যেই অংশটি ক্ষতের ঠিক ওপরে বসানো হবে তাতে যেন কোনোভাবেই হাতের স্পর্শ না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

✅ ব্যান্ডেজ করার নিয়ম: ব্যান্ডেজ এর ছোটো প্রান্তটি কেটে যাওয়া অঙ্গ এবং ড্রেসিং প্যাডের চারদিকে একবার মুড়িয়ে নিন। অপর প্রান্তটি হাতের চারদিকে ঘুরিয়ে আনুন যাতে পুরো প্যাডটি ঢেকে যায়। দুটো প্রান্ত কাছাকাছি এনে প্যাডের ওপরে বেঁধে দিন। এমনভাবে বাঁধবেন যেন জায়গাটি হালকা চাপে থাকে এবং ব্যান্ডেজের গিঁট খুলে না যায় ।

✅ ৪. নিয়মিত ড্রেসিং বদলে নিন

প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত ড্রেসিং বদলাতে হবে। ড্রেসিং ভিজে গেলে কিংবা ময়লা হয়ে গেলে বদলে ফেলতে হবে। ড্রেসিংটি পানিমুক্ত রাখতে গোসল করার আগে পানিনিরোধক কিছু (যেমন: প্লাস্টিক, পলিথিন) দিয়ে ড্রেসিংটি মুড়ে নিতে হবে।

কিছুদিন পর ক্ষত সেরে গেলে ড্রেসিং খুলে ফেলতে পারেন। উল্লেখ্য, ড্রেসিং রক্তে ভিজে গেলে সেটি না সরিয়ে, সেটির উপর অন্য আরেকটি ড্রেসিং দিয়ে ক্ষতস্থানে চেপে রাখুন। এতেও যদি রক্ত পড়া বন্ধ না হয়, দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যান।

✅ ৫. ব্যথানাশক ঔষধ সেবন

ক্ষতস্থানে ব্যথা হলে ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করা যাবে। যেমন: প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন।

যদি অনেক বেশি রক্তক্ষরণ হতে থাকে, রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান কিংবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করুন।

যখন ডাক্তার এর কাছে যাবেন

যদি ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অথবা যদি মনে করেন ইতোমধ্যে ইনফেকশন হয়ে গিয়েছে, দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান।

Information Source: সহায় হেলথ।

#firstaidtraining#treatment#bangladesh#SaveBangladeshiStudents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *