বাংলাদেশে নার্সিং পেশা ও চাকরির সুযোগ

আত্মতৃপ্তি ও সেবামূলক কাজ হিসেবে নার্সিং পেশা অন্যতম। এ পেশায় যারা সম্পৃক্ত হন তাদের সামাজিক মর্যাদার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ও উজ্জ্বল হয়ে থাকে। মানবসেবার সুমহান ব্রত নিয়ে কাজ করে যাওয়া নার্সিং পেশা বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ভাল বেতনের পাশাপাশি নানাবিধ সু্যোগ সুবিধা থাকায় তরুনীদের পাশাপাশি অনেক তরুনেরাও এই পেশার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।

নার্সিং কোথায় পড়বেন?
নার্সিং এ পড়তে হলে আপনাকে ন্যুনতম এইচ.এস.সি পাস করে আসতে হবে। তারপর আপনি কোন একটা নার্সিং ইনস্টিটিউট এ ভর্তি হতে পারবেন। সেখান থেকে আপনি বিএসসি ইন নার্সিং, ডিপ্লোমা -ইন- নার্সিং বা ডিপ্লোমা-ইন- নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি সনদ নিতে পারবেন। এজন্য দেশে প্রচুর প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটও রয়েছে। বর্তমানে ডিপ্লোমা-ইন- নার্সিং এর পাশাপাশি দেশে নার্সিং এর উপর বি.এস-সি করার ও সুযোগ রয়েছে।

কোথায় নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়?
বাংলাদেশ এর সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনি্ক‌, স্বাস্থকেন্দ্র সহ সকল স্বাস্থ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফ পদে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ এ নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সাবেক পিজি হাসপাতাল এ ও প্রায়ই নার্স নিয়োগ এর সার্কুলার হয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিধিমোতাবেক নার্স নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে।

নার্সিং এর কাজের পরিধি:
একজন নার্সকে সাধারণত চিকিৎসকের নানা কাজের সহকারী হিসেবে হাসপাতাল বা ক্লিনিকের আউটডোর ও ইনডোর, অপারেশন থিয়েটারে কাজ করতে হয়। তাছাড়া রোগীকে ওষুধ খেতে সহায়তা করাসহ নানাভাবে সেবা করারও কাজ করতে হয়। বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল থেকে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তো বটেই, বিদেশেও নার্সিং পেশার দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। বিশেষ করে সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, কাতার, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে ব্রুনাই এ নার্স রফতানি বিষয়ক একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও হয়েছে। দক্ষতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নার্স থেকে সিনিয়র স্টাফ নার্স ও সুপারিনটেনডেন্ট, নার্সিং ট্রেনিং কলেজের প্রশিক্ষক হতে পারেন।

আবেদনের যোগ্যতা:
সিনিয়র স্টাফ নার্স পদের জন্য ডিপ্লোমা ইন নার্সিং বা ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি ডিগ্রি এবং বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন থাকলে পদটিতে আবেদন করা যাবে। থাকতে হবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে দুই বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা। কোনো প্রার্থীর বিএসসি ইন নার্সিং ডিগ্রি এবং বিএনসির রেজিস্ট্রেশন থাকলে তা অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে গণ্য করা হবে।

বেতন ভাতা:
সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ এর দশম গ্রেড অনুযায়ী ১৬,০০০/- ৩৮,৬৪০/ টাকা বেতন দেয়া হবে।

নার্সিং এ পদোন্নতির সুযোগ:
চাকরিতে যোগদানের পর একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স তিন থেকে চার বছরে প্রথম পদোন্নতি পেয়ে নার্সিং সুপারভাইজার পদমর্যাদা পান। দ্বিতীয় ধাপে জেলা পাবলিক হেলথ নার্স, হাসপাতালগুলোতে ডেপুটি নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট, ওটি সুপারভাইজর, নার্সিং কলেজে ইনস্ট্রাক্টর, ডেমোনেস্ট্রেটর, ইনস্টিটিউটে নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর বা ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ হতে পারেন। পরবর্তী ধাপে হাসপাতালে নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট, নার্সিং কলেজে প্রভাষক, ইনস্টিটিউটে প্রিন্সিপাল, নার্সিং অধিদপ্তরে প্রজেক্ট অফিসার ও সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতির সুযোগ আছে। পদোন্নতির এ সময় তাঁরা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন।

✨Stay connected with Bebrainer

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *